৩২৪৬

পরিচ্ছেদঃ ১০. প্রথম অনুচ্ছেদ - স্ত্রীদের সাথে সদ্ব্যবহার এবং তাদের প্রত্যেকের (স্বামী-স্ত্রীর) পারস্পরিক হক ও অধিকার সংক্রান্ত

৩২৪৬-[৯] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ স্বামী যখন তার স্ত্রীকে (সহবাসের উদ্দেশে) বিছানায় ডাকে আর স্ত্রী তার ডাক প্রত্যাখ্যান করে। এমতাবস্থায় স্বামী অসন্তোষ অবস্থায় রাত্রি যাপন করে, তখন এ স্ত্রী এভাবে রাত্রি যাপন করে যে, মালায়িকাহ্ (ফেরেশতাগণ) তার ওপর অভিশাপ করতে থাকে রাত্রি শেষে ভোর অবধি। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

বুখারী ও মুসলিম-এর অপর বর্ণনায় আছে, তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ ঐ সত্তার কসম যার হাতে আমার প্রাণ! কোনো পুরুষ যদি তার স্ত্রীকে বিছানায় (সহবাসের উদ্দেশে) ডাকে আর স্ত্রী তা প্রত্যাখ্যান করে, তবে আকাশমন্ডলীর অধিকারী তার প্রতি অসন্তোষ থাকেন যতক্ষণ পর্যন্ত তার স্বামী তার প্রতি সন্তোষ না হয়।

بَابُ عِشْرَةِ النِّسَاءِ وَمَا لِكُلِّ وَاحِدَةِ مِّنَ الْحُقُوْقِ

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِذَا دَعَا الرَّجُلُ امْرَأَتَهُ إِلَى فِرَاشِهِ فَأَبَتْ فَبَاتَ غَضْبَانَ لَعَنَتْهَا الْمَلَائِكَةُ حَتَّى تُصْبِحَ» . مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ. وَفِي رِوَايَةٍ لَهُمَا قَالَ: «وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ مَا مِنْ رَجُلٍ يَدْعُو امْرَأَتَهُ إِلَى فِرَاشِهِ فَتَأْبَى عَلَيْهِ إِلَّا كَانَ الَّذِي فِي السَّمَاءِ ساخطا عَلَيْهَا حَتَّى يرضى عَنْهَا»

وعن ابي هريرة قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم اذا دعا الرجل امراته الى فراشه فابت فبات غضبان لعنتها الملاىكة حتى تصبح متفق عليه وفي رواية لهما قال والذي نفسي بيده ما من رجل يدعو امراته الى فراشه فتابى عليه الا كان الذي في السماء ساخطا عليها حتى يرضى عنها

ব্যাখ্যা: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বাণীঃ (إِذَا دَعَا الرَّجُلُ امْرَأَتَه إِلٰى فِرَاشِه) ‘‘যখন কোনো ব্যক্তি তার স্ত্রীকে বিছানার দিকে আহবান করে’’। এতে ইশারা রয়েছে একাধিক বিছানার বৈধতা এবং দু’জনের একত্রিত হওয়ার প্রতিও ইশারা রয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘‘তারা তোমাদের পোষাক স্বরূপ তোমরাও তাদের পোষাক স্বরূপ।’’ (সূরা আল বাকারা ২ : ১৮৭)

স্ত্রী যদি আহবানে অস্বীকার করে অর্থাৎ শারী‘আত ওযর ছাড়া আহবানে সাড়া না দেয় বা নিকটে আসতে অস্বীকার করে, আর স্বামী তার প্রতি এ চাহিদা নিয়ে অসন্তুষ্ট মনে বা তার প্রতি রাগান্বিত অবস্থায় রাত কাটায়, তাহলে আল্লাহর মালায়িকাহ্ (ফেরেশতামন্ডলী) সারা রাত ঐ নারীর ওপর লা‘নাত বর্ষণ করতে থাকেন। কেননা সে বিনা ওযরে তার স্বামীর প্রতি আনুগত্য নির্দেশ লঙ্ঘন করেছে, যে আনুগত্য কোনো পাপমূলক ছিল না।

অনেকেই বলেছেন, মাসিক ঋতুকালও ওযরের অন্তর্ভুক্ত নয়। অর্থাৎ মাসিক ঋতু অবস্থায়ও যদি স্বামী তাকে স্বীয় বিছানায় আহবান করে তবু তাকে তার সঙ্গ দিতে হবে। কেননা জুমহূর ‘উলামার মতে মাসিক অবস্থায় স্ত্রীর সাথে কেবল যৌনমিলন ছাড়া তার সকল কিছুই উপভোগ করতে পারবে এবং এটা তার অধিকার।

মালাকের (ফেরেশতার) লা‘নাত হবে সারা রাত্রি অর্থাৎ ফযর পর্যন্ত মালাক তার ওপর অভিসম্পাত করতে থাকবে। কেউ কেউ বলেছেনঃ এমনকি সারা দিনও এ অভিসম্পাত চলবে যতক্ষণ না তার চাহিদা থেকে অমুখাপেক্ষী হয়। পরিবর্তী বর্ণনায় তার প্রমাণ এসেছে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, স্বামী যদি তার স্ত্রীকে বিছানায় আহবান করে আর সে যদি তা অস্বীকার করে তাহলে আসমানের সত্বা অর্থাৎ মহান আল্লাহ তার প্রতি ক্রুদ্ধ হন, যতক্ষণ স্বামী তার ওপর সন্তুষ্ট না হন।

এ হাদীস আরো প্রমাণ করে যে, আল্লাহর অসন্তুষ্টির কারণ হলো স্বামীর অসন্তুষ্টি, অর্থাৎ স্বামী অসন্তুষ্ট হলে আল্লাহ তা‘আলাও অসন্তুষ্ট হন। [এটা তো স্বামীর একটা যৌন চাহিদা মিটানোর বিষয়ে আল্লাহর নির্দেশ অমান্যের কারণে, আর যিনি আল্লাহর দীনের নির্দেশাবলী অমান্য করে চলছেন তার প্রতি আল্লাহর অসন্তুষ্টি কি রকম হতে পারে?] [সম্পাদক] (ফাতহুল বারী ৬ষ্ঠ খঃ হাঃ ৩২৩৭, মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৩: বিবাহ (كتاب النكاح)