পরিচ্ছেদঃ ২৩১১. আল্লাহর বাণীঃ তুমি বলঃ হে আহলে কিতাব! এসো সে কথায় যা আমাদের ও তোমাদের মধ্যে একই; যেন আমরা আল্লাহ ব্যতীত কারো ইবাদাত না করি। (ইমরান ৩ঃ ৬৪) سَوَاءِ সঠিক ও ন্যায়।
৪১৯৬। ইবরাহীম ইবনু মূসা (রহঃ) ... ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আবূ সুফিয়ান আমাকে সামনাসামনি হাদীস শুনিয়েছেন। আবূ সুফিয়ান বলেন, আমাদের আর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মধ্যে সম্পাদিত চুক্তির মেয়াদে আমি ভ্রমণে বের হয়ে ছিলাম। আমি তখন সিরিয়ায় অবস্থান করছিলাম। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পক্ষ থেকে হিরাক্লিয়াসের নিকট থেকে একখানা পত্র পৌছান। দাহইয়াতুল কালবী এ চিঠিটা বসরাধিপতিকে দিয়েছিলেন। এরপর তিনি হিরাক্লিয়াসের নিকট পৌছিয়ে দিলেন। পত্র পেয়ে হিরাক্লিয়াস নবীর দাবিদার ব্যাক্তির গোত্রস্থি কেউ এখানে আছে কিনা জিজ্ঞাসা করলেন। তারা বলল, হ্যাঁ আছে। কয়েকজন কুরাইশীসহ আমাকে ডাকা হলে আমরা হিরাক্লিয়াসের নিকট গেলাম এবং আমাদেরকে তাঁর সম্মুখে বসালেন। এরপর তিনি বললেন, নবীর দাবিদার ব্যাক্তির তোমাদের মধ্যে নিকটতম আত্মীয় কে? আবূ সুফিয়ান বললেন, উত্তরে বললাম আমিই।
তারা আমাকে তাদের সম্মুখে এবং আমার সাথীদেরকে আমার পিছনে বসালেন। তারপর দোভাষিকে ডাকলেন এবং বললেন, এদেরকে জানিয়ে দাও যে, আমি নবীর দাবিদার ব্যাক্তিটি সম্পর্কে আবূ সুফিয়ানকে কিছু জিজ্ঞাসা করলে সে যদি আমার নিকট মিথ্যা বলে তোমরা তার মিথ্যাচারিতা ধরিয়ে দিবে। আবূ সুফিয়ান বলেন, যদি তাদের পক্ষ থেকে আমাকে মিথ্যুক প্রমাণের আশংকা না থাকত তাহলে আমি মিথ্যা বলতামই।
সুফিয়ান বললেন, তিনি আমাদের মধ্যে অভিজাত বংশের অধিকারী। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন যে, তাঁর পূর্বপুরুষদের কেউ কি রাজা-বাদশাহ ছিলেন? আমি বললাম, না। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, তাঁর সাম্প্রতিক বক্তব্যের পূর্বে তোমরা তাঁকে কখনো মিথ্যাচারের অপবাদ দিতে পেরেছ? আমি বললাম, না। তিনি বললেন, সম্ভ্রান্ত ব্যাক্তিবর্গ তাঁর অনুসরণ করছে, না দুর্বলগণ? আমি বললাম, বরং দুর্বলগণ। তিনি বললেন, তাদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে না হ্রাস পাচ্ছে। আমি বললাম বরং বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি বললেন, তাঁর ধর্মে দীক্ষিত হওয়ার পর তাঁর প্রতি ভীতশ্রদ্ধ হয়ে কেউ কি ধর্ম ত্যাগ করে? আমি বললাম, না। তিনি বললেন, তোমরা তাঁর বিরুদ্ধে কোন যুদ্ধ করেছ কি? আমি বললাম, জি হ্যাঁ। তিনি বললেন, তাঁর বিরুদ্ধে যুদ্ধের ফলাফল কি? আমি বললাম, আমাদের ও তাদের মধ্যে যুদ্ধের ফলাফল হলঃ একবার তিনি জয়ী হন, আর একবার আমরা জয়ী হই।
তিনি বললেন, তিনি প্রতিশ্রতি ভঙ্গ করেন কি? বললাম, না। তবে বর্তমানে আমরা একটি সন্ধির মেয়াদে আছি। দেখি এতে তিনি কি করেন। আবূ সুফিয়ান বলেন, আল্লাহর শপথ এর সাথে আর অতিরিক্ত কিছু বক্তব্য সংযোজন করার সাহস আমার ছিল না। বললেন, তাঁর পূর্বে এমন কেউ কি আর দাবি করেছে? বললাম না। তারপর তিনি তার দোভাষিকে বললেন যে, একে জানিয়ে দাও যে আমি তোমাকে তোমাদের সাথে সে ব্যাক্তির বংশ মর্যাদা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছিলাম। তারপর তুমি বলেছ যে, সে আমাদের মধ্যে কুলীন। তদ্রুপ রাসূলগণ শ্রেষ্ঠ বংশেই জন্মগ্রহণ করে থাকেন।
আমি জিজ্ঞাসা করেছিলাম যে তাঁর পূর্বপুরুষের কেউ রাজা-বাদশাহ ছিলেন কিনা? তুমি বলেছ, না। তাই আমি বলছি যে, যদি তাঁর পূর্বপুরুষের কেউ রাজা-বাদশাহ থাকতেন তাহলে বলতাম তিনি তাঁর পূর্বপুরুষদের রাজত্ব পুনরুদ্ধার করতে চাচ্ছেন। আমি তোমাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম যে, দুর্বলগণ তাঁর অনুসারী না সম্ভ্রান্তগণ? তুমি বলেছ দুর্বলগণই। আমি বলেছি যে যুগে যুগে দুর্বলগণই রাসূলদের অনুসারী হয়ে থাকি। আমি জিজ্ঞাসা করেছিলাম যে, এ দাবির পূর্বে তোমরা তাঁকে কখনো মিথ্যাচারের অপবাদ দিয়েছিলে কি? তুমি উত্তরে বলেছ যে, না। তাতে আমি বুঝেছি যে, যে ব্যাক্তি প্রথমে মানুষদের সাথে মিথ্যাচার ত্যাগ করেন, তারপর আল্লাহর সাথে মিথ্যাচারিতা করবেন, তা হতে পারে না। আমি তোমাদের জিজ্ঞাসা করেছিলাম যে, তাঁর ধর্মে দীক্ষিত হওয়ার পর তাঁর প্রতি বিরক্ত ও অসন্তুষ্ট হয়ে কেউ ধর্ম ত্যাগ করে কিনা? তুমি বলেছ, না।
আমি বলেছি, ঈমান যখন অন্তরের অন্তস্থলে একবার প্রবিষ্ট হয় তখন এ রকমই হয়। আমি তোমাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, তাঁর অনুসারীরা বৃদ্ধি পাচ্ছে না হ্রাস পাচ্ছে? তুমি বলেছ, ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমি বলেছি, ঈমান পূর্ণতা লাভ করলে এ অবস্থাই হয়। আমি জিজ্ঞাসা করেছিলাম যে, তাঁর বিরুদ্ধে তোমরা যুদ্ধ করেছ কি? তুমি বলেছ যে, যুদ্ধ করেছ এবং তার ফলাফল হচ্ছে পানি উত্তোলনের বালতির ন্যায়। কখনো তোমাদের বিরুদ্ধে তারা জয়লাভ করে আবার কখনো তাদের বিরুদ্ধে তোমরা জয়লাভ কর। এমনিভাবেই রাসূলদের পরীক্ষা করা হয়, তারপর চুড়ান্ত বিজয় তাদের পক্ষেই হয়ে থাকে। আমি জিজ্ঞাসা করেছিলাম, তিনি প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করেন কিনা? তুমি বলেছ না। তদ্রুপ রাসূলগণ প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করেন না।
আমি জিজ্ঞাসা করেছিলাম, তাঁর পূর্বে কেউ এ দাবি উত্থাপন করেছিল কিনা? তুমি বলেছ, না। আমি বলি যদি কেউ তাঁর পূর্বে এ ধরণের দাবি করে থাকত তাহলে আমি মনে করতাম এ ব্যাক্তি পূর্ববর্তী দাবির অনুসরণ করছে। আবূ সুফিয়ান বলেন, তারপর হিরাক্লিয়াস জিজ্ঞাসা করলেন, তিনি তোমাদের কি কাজের নির্দেশ দেন? আমি বললাম, সালাত (নামায/নামাজ) কায়েম করতে, যাকাত প্রদান করতে, আত্মীয়তা রক্ষা করতে এবং পাপচারিতা থেকে পবিত্র থাকার নির্দেশ দেন। হিরাক্লিয়াস বললেন, তাঁর সম্পর্কে তোমার বক্তব্য যদি সঠিক হয়, তাহলে তিনি ঠিকই নবী, তিনি আবির্ভূত হবেন তা আমি জানতাম বটে তবে তোমাদের মধ্যে আবির্ভূত হবেন তা মনে করিনি। যদি আমি তাঁর সান্নিধ্যে পৌছাবার সুযোগ পেতাম তাহলে আমি তাঁর সাক্ষাতকে অগ্রাধিকার দিতাম। যদি আমি তাঁর নিকট অবস্থান করতাম তাহলে আমি তাঁর পদযুগল ধুইয়ে দিতাম। আমার নিচের জমীন পর্যন্ত তাঁর রাজত্ব বিস্তৃত লাভ করবে।
আবূ সুফিয়ান বলেন, তারপর হিরাক্লিয়াস রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পত্রখানি আনতে বললেন। এরূপ পাঠ করতে বললেন। চিঠির বক্তব্য এইঃ
দয়াময় পরম দয়ালু আল্লাহর নামে, আল্লাহর রাসূল মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পক্ষ থেকে রোমের অধিপতি হিরাক্লিয়াসের প্রতি। হেদায়েতের অনুসারীর প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক। এরপর আমি আপনাকে ইসলামের দাওয়াত দিচ্ছি, ইসলাম গ্রহণ করুন, মুক্তি পাবেন। ইসলাম গ্রহণ করুন, আল্লাহ তাআলা আপনাকে দ্বিগুন প্রতিদান দেবেন। আর যদি মুখ ফিরিয়ে থাকেন তাহলে সকল প্রজার পাপরাশিও আপনার উপর নিপতিত হবে। হে কিতাবিগণ! এসো সে কথায়, যা আমাদের ও তোমাদের মধ্যে একই যে, আমরা আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো ইবাদত করবো না, কোন কিছুতেই তাঁর সাথে শরীক না করি। আর আমাদের একে অন্যকে আল্লাহ ব্যতীত প্রতিপালকরূপে গ্রহণ না করি। যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয় তবে বল, তোমরা সাক্ষী থাক, আমরা মুসলিম।
যখন তিনি পত্র পাঠ সমাপ্ত করলেন চতুর্দিকে উচ্চ রব উঠল এবং গুঞ্জন বৃদ্ধি পেল। তারপর তাঁর নির্দেশে আমাদের বাইরে নিয়ে আসা হল। আবূ সুফিয়ান বলেন, আমরা বেরিয়ে আসার পর আমি আমার সাথীদের বললা যে, আবূ কাবশার সন্তানের ব্যাপারে তো বিস্তর প্রভাব লাভ করেছে। রোমীয় রাষ্ট্র নায়ক পর্যন্ত তাকে ভয় পায়। তখন থেকে আমার মনে এ দৃঢ় বিশ্বাস জন্মেছিল যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দ্বীন অতি সত্বর বিজয় লাভ করবে। শেষ পর্যন্ত আল্লাহ তা’আলা আমাকে ইসলামে দীক্ষিত করলেন।
ইমাম যুহরী (রহঃ) বলেন, তারপর হিরাক্লিয়াস রোমের নেতৃবৃন্দকে ডেকে একটি কক্ষে একত্রিত করলেন এবং বললেন, হে রোমকগণ! তোমরা কি আজীবন সৎপথ ও সফলতার প্রত্যাশী এবং তোমাদের রাজত্ব অটুট থাকুক? এতে তারা তার প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়ে বন্য-গর্দভের ন্যায় পলায়নরত হল। কিন্তু দরজা গুলো সবই বন্ধ পেল। এরপর বাদশাহ নির্দেশ দিলেন যে, তাদের সবাইকে আমার নিকট নিয়ে এসো। তিনি তাদের সবাইকে ডাকলেন এবং বললেন, তোমাদের ধর্মের উপর তোমাদের আস্থা কতটুকু আছে তা আমি পরীক্ষা করলাম। আমি যা আশা করেছিলাম তা তোমাদের থেকে পেয়েছি। অনন্তর সবাই তাঁকে জিজ্ঞাসা করল এবং তার উপর সন্তুষ্ট থাকল।
باب قل يا أهل الكتاب تعالوا إلى كلمة سواء بيننا وبينكم أن لا نعبد إلا الله سواء قصد
حَدَّثَنِي إِبْرَاهِيمُ بْنُ مُوسَى، عَنْ هِشَامٍ، عَنْ مَعْمَرٍ،. وَحَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ أَخْبَرَنِي عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُتْبَةَ، قَالَ حَدَّثَنِي ابْنُ عَبَّاسٍ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبُو سُفْيَانَ، مِنْ فِيهِ إِلَى فِيَّ قَالَ انْطَلَقْتُ فِي الْمُدَّةِ الَّتِي كَانَتْ بَيْنِي وَبَيْنَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ ـ فَبَيْنَا أَنَا بِالشَّأْمِ إِذْ جِيءَ بِكِتَابٍ مِنَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم إِلَى هِرَقْلَ قَالَ وَكَانَ دِحْيَةُ الْكَلْبِيُّ جَاءَ بِهِ فَدَفَعَهُ إِلَى عَظِيمِ بُصْرَى، فَدَفَعَهُ عَظِيمُ بُصْرَى إِلَى ـ هِرَقْلَ ـ قَالَ فَقَالَ هِرَقْلُ هَلْ هَا هُنَا أَحَدٌ مِنْ قَوْمِ هَذَا الرَّجُلِ الَّذِي يَزْعُمُ أَنَّهُ نَبِيٌّ فَقَالُوا نَعَمْ. قَالَ فَدُعِيتُ فِي نَفَرٍ مِنْ قُرَيْشٍ فَدَخَلْنَا عَلَى هِرَقْلَ، فَأُجْلِسْنَا بَيْنَ يَدَيْهِ فَقَالَ أَيُّكُمْ أَقْرَبُ نَسَبًا مِنْ هَذَا الرَّجُلِ الَّذِي يَزْعُمُ أَنَّهُ نَبِيٌّ فَقَالَ أَبُو سُفْيَانَ فَقُلْتُ أَنَا. فَأَجْلَسُونِي بَيْنَ يَدَيْهِ، وَأَجْلَسُوا أَصْحَابِي خَلْفِي، ثُمَّ دَعَا بِتُرْجُمَانِهِ فَقَالَ قُلْ لَهُمْ إِنِّي سَائِلٌ هَذَا عَنْ هَذَا الرَّجُلِ الَّذِي يَزْعُمُ أَنَّهُ نَبِيٌّ، فَإِنْ كَذَبَنِي فَكَذِّبُوهُ. قَالَ أَبُو سُفْيَانَ وَايْمُ اللَّهِ، لَوْلاَ أَنْ يُؤْثِرُوا عَلَىَّ الْكَذِبَ لَكَذَبْتُ. ثُمَّ قَالَ لِتُرْجُمَانِهِ سَلْهُ كَيْفَ حَسَبُهُ فِيكُمْ قَالَ قُلْتُ هُوَ فِينَا ذُو حَسَبٍ. قَالَ فَهَلْ كَانَ مِنْ آبَائِهِ مَلِكٌ قَالَ قُلْتُ لاَ. قَالَ فَهَلْ كُنْتُمْ تَتَّهِمُونَهُ بِالْكَذِبِ قَبْلَ أَنْ يَقُولَ مَا قَالَ قُلْتُ لاَ. قَالَ أَيَتَّبِعُهُ أَشْرَافُ النَّاسِ أَمْ ضُعَفَاؤُهُمْ قَالَ قُلْتُ بَلْ ضُعَفَاؤُهُمْ. قَالَ يَزِيدُونَ أَوْ يَنْقُصُونَ قَالَ قُلْتُ لاَ بَلْ يَزِيدُونَ. قَالَ هَلْ يَرْتَدُّ أَحَدٌ مِنْهُمْ عَنْ دِينِهِ، بَعْدَ أَنْ يَدْخُلَ فِيهِ، سَخْطَةً لَهُ قَالَ قُلْتُ لاَ. قَالَ فَهَلْ قَاتَلْتُمُوهُ قَالَ قُلْتُ نَعَمْ. قَالَ فَكَيْفَ كَانَ قِتَالُكُمْ إِيَّاهُ قَالَ قُلْتُ تَكُونُ الْحَرْبُ بَيْنَنَا وَبَيْنَهُ سِجَالاً، يُصِيبُ مِنَّا وَنُصِيبُ مِنْهُ. قَالَ فَهَلْ يَغْدِرُ قَالَ قُلْتُ لاَ وَنَحْنُ مِنْهُ فِي هَذِهِ الْمُدَّةِ لاَ نَدْرِي مَا هُوَ صَانِعٌ فِيهَا. قَالَ وَاللَّهِ مَا أَمْكَنَنِي مِنْ كَلِمَةٍ أُدْخِلُ فِيهَا شَيْئًا غَيْرَ هَذِهِ. قَالَ فَهَلْ قَالَ هَذَا الْقَوْلَ أَحَدٌ قَبْلَهُ قُلْتُ لاَ. ثُمَّ قَالَ لِتُرْجُمَانِهِ قُلْ لَهُ إِنِّي سَأَلْتُكَ عَنْ حَسَبِهِ فِيكُمْ، فَزَعَمْتَ أَنَّهُ فِيكُمْ ذُو حَسَبٍ، وَكَذَلِكَ الرُّسُلُ تُبْعَثُ فِي أَحْسَابِ قَوْمِهَا، وَسَأَلْتُكَ هَلْ كَانَ فِي آبَائِهِ مَلِكٌ فَزَعَمْتَ أَنْ لاَ فَقُلْتُ لَوْ كَانَ مِنْ آبَائِهِ مَلِكٌ قُلْتُ رَجُلٌ يَطْلُبُ مُلْكَ آبَائِهِ، وَسَأَلْتُكَ عَنْ أَتْبَاعِهِ أَضُعَفَاؤُهُمْ أَمْ أَشْرَافُهُمْ فَقُلْتَ بَلْ ضُعَفَاؤُهُمْ، وَهُمْ أَتْبَاعُ الرُّسُلِ، وَسَأَلْتُكَ هَلْ كُنْتُمْ تَتَّهِمُونَهُ بِالْكَذِبِ قَبْلَ أَنْ يَقُولَ مَا قَالَ فَزَعَمْتَ أَنْ لاَ، فَعَرَفْتُ أَنَّهُ لَمْ يَكُنْ لِيَدَعَ الْكَذِبَ عَلَى النَّاسِ ثُمَّ يَذْهَبَ فَيَكْذِبَ عَلَى اللَّهِ، وَسَأَلْتُكَ هَلْ يَرْتَدُّ أَحَدٌ مِنْهُمْ عَنْ دِينِهِ بَعْدَ أَنْ يَدْخُلَ فِيهِ سَخْطَةً لَهُ فَزَعَمْتَ أَنْ لاَ، وَكَذَلِكَ الإِيمَانُ إِذَا خَالَطَ بَشَاشَةَ الْقُلُوبِ، وَسَأَلْتُكَ هَلْ يَزِيدُونَ أَمْ يَنْقُصُونَ فَزَعَمْتَ أَنَّهُمْ يَزِيدُونَ، وَكَذَلِكَ الإِيمَانُ حَتَّى يَتِمَّ، وَسَأَلْتُكَ هَلْ قَاتَلْتُمُوهُ فَزَعَمْتَ أَنَّكُمْ قَاتَلْتُمُوهُ فَتَكُونُ الْحَرْبُ بَيْنَكُمْ وَبَيْنَهُ سِجَالاً، يَنَالُ مِنْكُمْ وَتَنَالُونَ مِنْهُ، وَكَذَلِكَ الرُّسُلُ تُبْتَلَى، ثُمَّ تَكُونُ لَهُمُ الْعَاقِبَةُ، وَسَأَلْتُكَ هَلْ يَغْدِرُ فَزَعَمْتَ أَنَّهُ لاَ يَغْدِرُ، وَكَذَلِكَ الرُّسُلُ لاَ تَغْدِرُ، وَسَأَلْتُكَ هَلْ قَالَ أَحَدٌ هَذَا الْقَوْلَ قَبْلَهُ فَزَعَمْتَ أَنْ لاَ، فَقُلْتُ لَوْ كَانَ قَالَ هَذَا الْقَوْلَ أَحَدٌ قَبْلَهُ قُلْتُ رَجُلٌ ائْتَمَّ بِقَوْلٍ قِيلَ قَبْلَهُ. قَالَ ثُمَّ قَالَ بِمَ يَأْمُرُكُمْ قَالَ قُلْتُ يَأْمُرُنَا بِالصَّلاَةِ وَالزَّكَاةِ وَالصِّلَةِ وَالْعَفَافِ. قَالَ إِنْ يَكُ مَا تَقُولُ فِيهِ حَقًّا فَإِنَّهُ نَبِيٌّ، وَقَدْ كُنْتُ أَعْلَمُ أَنَّهُ خَارِجٌ، وَلَمْ أَكُ أَظُنُّهُ مِنْكُمْ، وَلَوْ أَنِّي أَعْلَمُ أَنِّي أَخْلُصُ إِلَيْهِ لأَحْبَبْتُ لِقَاءَهُ، وَلَوْ كُنْتُ عِنْدَهُ لَغَسَلْتُ عَنْ قَدَمَيْهِ، وَلَيَبْلُغَنَّ مُلْكُهُ مَا تَحْتَ قَدَمَىَّ. قَالَ ثُمَّ دَعَا بِكِتَابِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَرَأَهُ، فَإِذَا فِيهِ " بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ مِنْ مُحَمَّدٍ رَسُولِ اللَّهِ، إِلَى هِرَقْلَ عَظِيمِ الرُّومِ، سَلاَمٌ عَلَى مَنِ اتَّبَعَ الْهُدَى، أَمَّا بَعْدُ، فَإِنِّي أَدْعُوكَ بِدِعَايَةِ الإِسْلاَمِ، أَسْلِمْ تَسْلَمْ، وَأَسْلِمْ يُؤْتِكَ اللَّهُ أَجْرَكَ مَرَّتَيْنِ، فَإِنْ تَوَلَّيْتَ فَإِنَّ عَلَيْكَ إِثْمَ الأَرِيسِيِّينَ، وَ(يَا أَهْلَ الْكِتَابِ تَعَالَوْا إِلَى كَلِمَةٍ سَوَاءٍ بَيْنَنَا وَبَيْنَكُمْ أَنْ لاَ نَعْبُدَ إِلاَّ اللَّهَ) إِلَى قَوْلِهِ (اشْهَدُوا بِأَنَّا مُسْلِمُونَ)". فَلَمَّا فَرَغَ مِنْ قِرَاءَةِ الْكِتَابِ ارْتَفَعَتِ الأَصْوَاتُ عِنْدَهُ، وَكَثُرَ اللَّغَطُ، وَأُمِرَ بِنَا فَأُخْرِجْنَا قَالَ فَقُلْتُ لأَصْحَابِي حِينَ خَرَجْنَا لَقَدْ أَمِرَ أَمْرُ ابْنِ أَبِي كَبْشَةَ، أَنَّهُ لَيَخَافُهُ مَلِكُ بَنِي الأَصْفَرِ فَمَا زِلْتُ مُوقِنًا بِأَمْرِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ سَيَظْهَرُ حَتَّى أَدْخَلَ اللَّهُ عَلَىَّ الإِسْلاَمَ. قَالَ الزُّهْرِيُّ فَدَعَا هِرَقْلُ عُظَمَاءَ الرُّومِ فَجَمَعَهُمْ فِي دَارٍ لَهُ فَقَالَ يَا مَعْشَرَ الرُّومِ، هَلْ لَكُمْ فِي الْفَلاَحِ وَالرَّشَدِ آخِرَ الأَبَدِ، وَأَنْ يَثْبُتَ لَكُمْ مُلْكُكُمْ قَالَ فَحَاصُوا حَيْصَةَ حُمُرِ الْوَحْشِ إِلَى الأَبْوَابِ، فَوَجَدُوهَا قَدْ غُلِقَتْ، فَقَالَ عَلَىَّ بِهِمْ. فَدَعَا بِهِمْ فَقَالَ إِنِّي إِنَّمَا اخْتَبَرْتُ شِدَّتَكُمْ عَلَى دِينِكُمْ، فَقَدْ رَأَيْتُ مِنْكُمُ الَّذِي أَحْبَبْتُ. فَسَجَدُوا لَهُ وَرَضُوا عَنْهُ.
Narrated Ibn `Abbas:
Abu Sufyan narrated to me personally, saying, "I set out during the Truce that had been concluded between me and Allah's Messenger (ﷺ). While I was in Sham, a letter sent by the Prophet (ﷺ) was brought to Heraclius. Dihya Al-Kalbi had brought and given it to the governor of Busra, and the latter forwarded it to Heraclius. Heraclius said, 'Is there anyone from the people of this man who claims to be a prophet?' The people replied, 'Yes.' So I along with some of Quraishi men were called and we entered upon Heraclius, and we were seated in front of him. Then he said, 'Who amongst you is the nearest relative to the man who claims to be a prophet?' So they made me sit in front of him and made my companions sit behind me. Then he called upon his translator and said (to him). 'Tell them ( i.e. Abu Sufyan's companions) that I am going to ask him (i.e. Abu Sufyan) regarding that man who claims to be a prophet. So, if he tell me a lie, they should contradict him (instantly).' By Allah, had I not been afraid that my companions would consider me a liar, I would have told lies. Heraclius then said to his translator, 'Ask him: What is his (i.e. the Prophet's) family status amongst you? I said, 'He belongs to a noble family amongst us." Heraclius said, 'Was any of his ancestors a king?' I said, 'No.' He said, 'Did you ever accuse him of telling lies before his saying what he has said?' I said, 'No.' He said, 'Do the nobles follow him or the poor people?' I said, 'It is the poor who followed him.' He said, 'Is the number of his follower increasing or decreasing?' I said, 'The are increasing.' He said, 'Does anyone renounce his religion (i.e. Islam) after embracing it, being displeased with it?' I said, 'No.' He said, 'Did you fight with him?' I replied, 'Yes.' He said, 'How was your fighting with him?' I said, 'The fighting between us was undecided and victory was shared by him and us by turns. He inflicts casualties upon us and we inflict casualties upon him.' He said, 'Did he ever betray?' I said, 'No, but now we are away from him in this truce and we do not know what he will do in it" Abu Sufyan added, "By Allah, I was not able to insert in my speech a word (against him) except that. Heraclius said, 'Did anybody else (amongst you) ever claimed the same (i.e. Islam) before him? I said, 'No.' Then Heraclius told his translator to tell me (i.e. Abu Sufyan), 'I asked you about his family status amongst you, and you told me that he comes from a noble family amongst you Verily, all Apostles come from the noblest family among their people. Then I asked you whether any of his ancestors was a king, and you denied that. Thereupon I thought that had one of his fore-fathers been a king, I would have said that he (i.e. Muhammad) was seeking to rule the kingdom of his fore-fathers. Then I asked you regarding his followers, whether they were the noble or the poor among the people, and you said that they were only the poor (who follow him). In fact, such are the followers of the Apostles. Then I asked you whether you have ever accused him of telling lies before saying what he said, and your reply was in the negative. Therefore, I took for granted that a man who did not tell a lie about others, could ever tell a lie about Allah. Then I asked you whether anyone of his followers had renounced his religion (i.e. Islam) after embracing it, being displeased with it, and you denied that. And such is Faith when it mixes with the cheerfulness of the hearts. Then I asked you whether his followers were increasing or decreasing. You claimed that they were increasing. That is the way of true faith till it is complete. Then I asked you whether you had ever fought with him, and you claimed that you had fought with him and the battle between you and him was undecided and the victory was shared by you and him in turns; he inflicted casual ties upon you and you inflicted casualties upon them. Such is the case with the Apostles; they are out to test and the final victory is for them. Then I asked you whether he had ever betrayed; you claimed that he had never betrayed. I need, Apostles never betray. Then I asked you whether anyone had said this statement before him; and you denied that. Thereupon I thought if somebody had said that statement before him, then I would have said that he was but a man copying some sayings said before him." Abu Safyan said, "Heraclius then asked me, 'What does he order you to do?' I said, 'He orders us (to offer) prayers and (to pay) Zakat and to keep good relationship with the Kith and kin and to be chaste.' Then Heraclius said, 'If whatever you have said, is true, he is really a prophet, and I knew that he ( i.e. the Prophet (ﷺ) ) was going to appear, but I never thought that he would be from amongst you. If I were certain that I can reach him, I would like to meet him and if I were with him, I would wash his feet; and his kingdom will expand (surely to what is under my feet.' Then Heraclius asked for the letter of Allah's Messenger (ﷺ) and read it wherein was written: "In the Name of Allah, the Most Beneficent, the Most Merciful. This letter is) from Muhammad, Apostle of Allah, to Heraclius, the sovereign of Byzantine........ Peace be upon him who follows the Right Path. Now then, I call you to embrace Islam. Embrace Islam and you will be saved (from Allah's Punishment); embrace Islam, and Allah will give you a double reward, but if you reject this, you will be responsible for the sins of all the people of your kingdom (Allah's Statement):--"O the people of the Scripture (Jews and Christians)! Come to a word common to you and us that we worship None but Allah....bear witness that we are Muslims.' (3.64) When he finished reading the letter, voices grew louder near him and there was a great hue and cry, and we were ordered to go out." Abu Sufyan added, "While coming out, I said to my companions, 'The situation of Ibn Abu Kabsha (i.e. Muhammad) has become strong; even the king of Banu Al14 Asfar is afraid of him.' So I continued to believe that Allah's Messenger (ﷺ) would be victorious, till Allah made me embrace Islam." Az-Zuhri said, "Heraclius then invited all the chiefs of the Byzantines and had them assembled in his house and said, 'O group of Byzantines! Do you wish to have a permanent success and guidance and that your kingdom should remain with you?' (Immediately after hearing that), they rushed towards the gate like onagers, but they found them closed. Heraclius then said, 'Bring them back to me.' So he called them and said, 'I just wanted to test the strength of your adherence to your religion. Now I have observed of you that which I like.' Then the people fell in prostration before him and became pleased with him."