৭২২

পরিচ্ছেদঃ রামাযানের সিয়াম ভঙ্গ করার কাফফারা।

৭২২. নাসর ইবনু আলী জাহযামী ও আবূ আম্মার (রহঃ) ..... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্নিত। তাঁরা বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এক ব্যক্তি এসে বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি তো ধ্বংস হয়ে গেছি। তিনি বললেনঃ কিসে তোমাকে ধ্বংস করলো? লোকটি বলল, রামাযানে আমি স্ত্রী সংগম করেছি। তিনি বললেন, তুমি কি একটি গোলাম আযাদ করতে সক্ষম? লোকটি বলল, না। তিনি বললেন, তুমি কি লাগাতার দুই মাস সিয়াম পালনে সমর্থ? লোকটি বলল, না। তিনি বললেন, ষাটজন মিসকিনকে আহার করাতে সক্ষম? লোকটি বলল, না। তখন তিনি তাকে বললেন, তুমি বসো। লোকটি বসে রইলো। তারপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এক আরক খেজুর এলো। ’আরক’ হল বড় থলে বা টুকরি। তিনি লোকটিকে বললেন, এগুলো নিয়ে সা’দকা করে দাও। লোকটি বলল, মদিনার দুই প্রান্তের মাঝে আমার চাইতে অভাবগ্রস্ত আর কেউ নেই। আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন, তিনি শুনে হেসে উঠলেন, এমন কি তার চোয়ালের দাঁত প্রকাশ পেল। তিনি বললেন, তুমি নিয়ে নাও তোমার পরিবারবর্গকে আহার করাও। - ইবনু মাজাহ ১৬৭১, বুখারি ও মুসলিম, তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ৭২৪ [আল মাদানী প্রকাশনী]

এই বিষয়ে ইবনু উমার, আয়িশা ও আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাঃ) থেকেও হাদিস বর্ণিত আছে। ইমাম আবূ ঈসা (রহঃ) বলেন, আবূ হুরায়রা (রাঃ) বর্ণিত হাদিসটি হাসান সহিহ। যে ব্যক্তি রমযান মাসে ইচ্ছাকৃতভাবে স্ত্রী সংগম দ্বারা সিয়াম ভঙ্গ করে তার ব্যাপারে এই হাদীস অনুসারে উলামায়ে কিরামদের আমল রয়েছে। কিন্তু কেউ যদি পানাহার করে ইচ্ছাকৃতভাবে সাওম ভেঙ্গে ফেলে তবে তার বিষয়ে আলিমগণের মতভেদ রয়েছে। কোন কোন আলিম বলেন, তাকে কাযা ও কাফফারা উভয় আদায় করতে হবে। তারা পানাহারকে স্ত্রী সংগমের সাথে সা’দৃশ্যপূর্ণ বলে মনে করেন। এ হলো সুফিয়ান সাওরী, ইবনু মুবারক ও ইসহাক এর অভিমত।

কোন কোন আলিম বলেন, তাকে কাযা করতে হবে। কিন্তু কাফফারা দিতে হবেনা। কারণ, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে স্ত্রী সংগমের ক্ষেত্রেই কাফফারা উল্লেখ রয়েছে। পানাহারের ক্ষেত্রে এর উল্লেখ নেই। তারা বলেন, স্ত্রী সংগমের সাথে পানাহারের সা’দৃশ্য নেই। এ হলো, ইমাম শাফিঈ ও আহমাদ (রহঃ) এর অভিমত।

ইমাম শাফিঈ (রহঃ) বলেন, সিয়াম ভঙ্গকারী ব্যক্তিকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উক্ত সা’দকা করে দিয়েছিলেন; তার উক্তি নাও, তোমার পরিবারবর্গকে তার আহার করাও, বিভিন্নার্থ বহন করে। হতে পারে যে, কাফফারা তো যে সক্ষম তার দিতে হয়। এই ব্যাক্তি তখন কাফফারা দিতে সক্ষম ছিল না। পরে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন তাকে কিছু দিলেন আর সে তার মালিক হয়ে গেল তখন সে বলল, এ এলাকায় আমাদের চাইতে বেশী অভাবগ্রস্ত আর কেউ নাই। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, নিয়ে যাও এবং তোমার পরিবারবর্গকে আহার করাও। কেননা, জীবন ধারণের মত পরিমাণ খাদ্যের অতিরিক্ত যা হয় তা কাফফারা হয়। যার অবস্থা এই ব্যক্তির ন্যায় তার সম্পর্কে ইমাম শাফেঈর মত হলো, সে ঐ মাল ভোগ করতে পারে। আর কাফফারা তার সিয়াম থেকে যাবে। যেদিন সে মালিক হবে সেদিন সে কাফফারা দিবে।

باب مَا جَاءَ فِي كَفَّارَةِ الْفِطْرِ فِي رَمَضَانَ

حَدَّثَنَا نَصْرُ بْنُ عَلِيٍّ الْجَهْضَمِيُّ، وَأَبُو عَمَّارٍ وَالْمَعْنَى وَاحِدٌ وَاللَّفْظُ لَفْظُ أَبِي عَمَّارٍ قَالاَ أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ حُمَيْدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ أَتَاهُ رَجُلٌ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ هَلَكْتُ ‏.‏ قَالَ ‏"‏ وَمَا أَهْلَكَكَ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ وَقَعْتُ عَلَى امْرَأَتِي فِي رَمَضَانَ ‏.‏ قَالَ ‏"‏ هَلْ تَسْتَطِيعُ أَنْ تُعْتِقَ رَقَبَةً ‏"‏ ‏.‏ قَالَ لاَ ‏.‏ قَالَ ‏"‏ فَهَلْ تَسْتَطِيعُ أَنْ تَصُومَ شَهْرَيْنِ مُتَتَابِعَيْنِ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ لاَ ‏.‏ قَالَ ‏"‏ فَهَلْ تَسْتَطِيعُ أَنْ تُطْعِمَ سِتِّينَ مِسْكِينًا ‏"‏ ‏.‏ قَالَ لاَ ‏.‏ قَالَ ‏"‏ اجْلِسْ ‏"‏ ‏.‏ فَجَلَسَ فَأُتِيَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِعَرَقٍ فِيهِ تَمْرٌ - وَالْعَرَقُ الْمِكْتَلُ الضَّخْمُ قَالَ ‏"‏ تَصَدَّقْ بِهِ ‏"‏ ‏.‏ فَقَالَ مَا بَيْنَ لاَبَتَيْهَا أَحَدٌ أَفْقَرَ مِنَّا ‏.‏ قَالَ فَضَحِكَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم حَتَّى بَدَتْ أَنْيَابُهُ ‏.‏ قَالَ ‏"‏ فَخُذْهُ فَأَطْعِمْهُ أَهْلَكَ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عُمَرَ وَعَائِشَةَ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو ‏.‏ قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ ‏.‏ وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا الْحَدِيثِ عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ فِي مَنْ أَفْطَرَ فِي رَمَضَانَ مُتَعَمِّدًا مِنْ جِمَاعٍ وَأَمَّا مَنْ أَفْطَرَ مُتَعَمِّدًا مِنْ أَكْلٍ أَوْ شُرْبٍ فَإِنَّ أَهْلَ الْعِلْمِ قَدِ اخْتَلَفُوا فِي ذَلِكَ فَقَالَ بَعْضُهُمْ عَلَيْهِ الْقَضَاءُ وَالْكَفَّارَةُ ‏.‏ وَشَبَّهُوا الأَكْلَ وَالشُّرْبَ بِالْجِمَاعِ ‏.‏ وَهُوَ قَوْلُ سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ وَابْنِ الْمُبَارَكِ وَإِسْحَاقَ ‏.‏ وَقَالَ بَعْضُهُمْ عَلَيْهِ الْقَضَاءُ وَلاَ كَفَّارَةَ عَلَيْهِ لأَنَّهُ إِنَّمَا ذُكِرَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم الْكَفَّارَةُ فِي الْجِمَاعِ وَلَمْ تُذْكَرْ عَنْهُ فِي الأَكْلِ وَالشُّرْبِ ‏.‏ وَقَالُوا لاَ يُشْبِهُ الأَكْلُ وَالشُّرْبُ الْجِمَاعَ ‏.‏ وَهُوَ قَوْلُ الشَّافِعِيِّ وَأَحْمَدَ ‏.‏ وَقَالَ الشَّافِعِيُّ وَقَوْلُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم لِلرَّجُلِ الَّذِي أَفْطَرَ فَتَصَدَّقَ عَلَيْهِ ‏"‏ خُذْهُ فَأَطْعِمْهُ أَهْلَكَ ‏"‏ ‏.‏ يَحْتَمِلُ هَذَا مَعَانِيَ يَحْتَمِلُ أَنْ تَكُونَ الْكَفَّارَةُ عَلَى مَنْ قَدَرَ عَلَيْهَا وَهَذَا رَجُلٌ لَمْ يَقْدِرْ عَلَى الْكَفَّارَةِ فَلَمَّا أَعْطَاهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم شَيْئًا وَمَلَكَهُ فَقَالَ الرَّجُلُ مَا أَحَدٌ أَفْقَرَ إِلَيْهِ مِنَّا ‏.‏ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ خُذْهُ فَأَطْعِمْهُ أَهْلَكَ ‏"‏ ‏.‏ لأَنَّ الْكَفَّارَةَ إِنَّمَا تَكُونُ بَعْدَ الْفَضْلِ عَنْ قُوتِهِ ‏.‏ وَاخْتَارَ الشَّافِعِيُّ لِمَنْ كَانَ عَلَى مِثْلِ هَذَا الْحَالِ أَنْ يَأْكُلَهُ وَتَكُونَ الْكَفَّارَةُ عَلَيْهِ دَيْنًا فَمَتَى مَا مَلَكَ يَوْمًا مَا كَفَّرَ ‏.‏

حدثنا نصر بن علي الجهضمي وابو عمار والمعنى واحد واللفظ لفظ ابي عمار قالا اخبرنا سفيان بن عيينة عن الزهري عن حميد بن عبد الرحمن عن ابي هريرة قال اتاه رجل فقال يا رسول الله هلكت قال وما اهلكك قال وقعت على امراتي في رمضان قال هل تستطيع ان تعتق رقبة قال لا قال فهل تستطيع ان تصوم شهرين متتابعين قال لا قال فهل تستطيع ان تطعم ستين مسكينا قال لا قال اجلس فجلس فاتي النبي صلى الله عليه وسلم بعرق فيه تمر والعرق المكتل الضخم قال تصدق به فقال ما بين لابتيها احد افقر منا قال فضحك النبي صلى الله عليه وسلم حتى بدت انيابه قال فخذه فاطعمه اهلك قال وفي الباب عن ابن عمر وعاىشة وعبد الله بن عمرو قال ابو عيسى حديث ابي هريرة حديث حسن صحيح والعمل على هذا الحديث عند اهل العلم في من افطر في رمضان متعمدا من جماع واما من افطر متعمدا من اكل او شرب فان اهل العلم قد اختلفوا في ذلك فقال بعضهم عليه القضاء والكفارة وشبهوا الاكل والشرب بالجماع وهو قول سفيان الثوري وابن المبارك واسحاق وقال بعضهم عليه القضاء ولا كفارة عليه لانه انما ذكر عن النبي صلى الله عليه وسلم الكفارة في الجماع ولم تذكر عنه في الاكل والشرب وقالوا لا يشبه الاكل والشرب الجماع وهو قول الشافعي واحمد وقال الشافعي وقول النبي صلى الله عليه وسلم للرجل الذي افطر فتصدق عليه خذه فاطعمه اهلك يحتمل هذا معاني يحتمل ان تكون الكفارة على من قدر عليها وهذا رجل لم يقدر على الكفارة فلما اعطاه النبي صلى الله عليه وسلم شيىا وملكه فقال الرجل ما احد افقر اليه منا فقال النبي صلى الله عليه وسلم خذه فاطعمه اهلك لان الكفارة انما تكون بعد الفضل عن قوته واختار الشافعي لمن كان على مثل هذا الحال ان ياكله وتكون الكفارة عليه دينا فمتى ما ملك يوما ما كفر


Abu Hurairah narrated that:
A man came and said: "O Messenger of Allah; I am ruined!" He said: "What has ruined you?" He said: "I had sexual relations with my wife during Ramadan." He said: "Are you able to free a slave?" He said, "No." He said: "Then are you able to fast for two consecutive months?" He said, "No." He said: "Then are you able to feed sixty needy people?" He said, "No." He said: "Sit." So he sat. A big basket full of dates was brought to the Prophet, and he said: "Give it in charity." So he said: "There is no one needier than us between its two mountains." So the Prophet laughing until his pre-molar teeth appeared, and he said: "Then take it to feed your family."


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
সুনান আত তিরমিজী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৮/ সাওম (রোজা) (كتاب الصوم عن رسول الله ﷺ)