৩৮৮২

পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - যুদ্ধাস্ত্রের প্রস্তুতিকরণ

৩৮৮২-[২২] ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন একজন নির্দেশপ্রাপ্ত বান্দা। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাদের (আহলে বায়তের) জন্য তিনটি কাজ ব্যতীত অন্য কোনো বিষয়ে বিশেষ কোনো নির্দেশ দেননি। আর তা হলো তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন, আমরা যেন পূর্ণাঙ্গরূপে উযূ করি, আমরা যেন সাদাকা না খাই এবং ঘোড়া-গাধার মিলনে প্রজনন না ঘটাই। (তিরমিযী, নাসায়ী)[1]

وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَبْدًا مَأْمُورًا مَا اخْتَصَّنَا دُونَ النَّاسِ بِشَيْءٍ إِلَّا بِثَلَاثٍ: أَمَرَنَا أَنْ نُسْبِغَ الْوُضُوءَ وَأَنْ لَا نَأْكُلَ الصَّدَقَةَ وَأَنْ لَا نَنْزِيَ حمارا على فرس. رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ وَالنَّسَائِيّ

ব্যাখ্যা: (كَانَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ عَبْدًا مَأْمُوْرًا) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নির্দেশপ্রাপ্ত বান্দা ছিলেন অর্থাৎ আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রিসালাতের দায়িত্ব প্রচারে আদিষ্ট ছিলেন। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেনঃ ‘‘হে রসূল! তোমার প্রতি তোমার রবের পক্ষ থেকে যা নাযিল করা হয়েছে তা প্রচার কর’’- (সূরা আল মায়িদাহ্ ৫ : ৬৭)।

(মিরকাতুল মাফাতীহ ৭ম খন্ড, পৃঃ ৪০২)

(مَا اخْتَصَّنَا دُوْنَ النَّاسِ بِشَيْءٍ) ‘‘তিনি আমাদের জন্য বিশেষ কোনো নির্দেশ দেননি’’ এর দ্বারা আহলুল বায়ত। অর্থাৎ- তিনি আহলে বায়তগণের জন্য বিশেষ কোনো নির্দেশ দেননি।

(إِلَّا بِثَلَاثٍ) তবে আমাদেরকে পরিপূর্ণভাবে উযূ করার তিনটি নির্দেশ দিয়েছেন। কাযী ‘ইয়ায বলেনঃ এ নির্দেশ দ্বারা ওয়াজিব উদ্দেশ্য। নতুবা এতে কোনো বিশেষ নির্দেশনা পাওয়া যাবে না। কেননা পূর্ণভাবে উযূ করা সকলের জন্যই মুস্তাহাব, অতএব আহলে বায়তগণের জন্য এ নির্দেশনা অন্যান্য লোকেদের চাইতে ভিন্ন নির্দেশ তা হলো পূর্ণভাবে উযূ করা তাদের জন্য ওয়াজিব।

(وَأَنْ لَا نَأْكُلَ الصَّدَقَةَ) ‘‘আমরা যেন সাদাকা ভক্ষণ না করি’’ আহলে বায়তগণের জন্য সাদাকা ভক্ষণ করা হারাম। যদিও উম্মাতের অন্যান্য লোকেদের মধ্যে যারা দরিদ্র তাদের জন্য সাদাকা ভক্ষণ করা হালাল। অতএব এক্ষেত্রেও আহলে বায়তগণের বিশেষ নির্দেশনা রয়েছে।

(وَأَنْ لَا نَنْزِىَ حِمَارًا عَلٰى فَرَسٍ) আমরা যেন গাধা দ্বারা ঘোড়াকে পাল না দেই। ঘোড়াকে গাধা দিয়ে পাল দেয়া সাধারণ করা হয় উৎকৃষ্ট বস্তুর পরিবর্তে নিকৃষ্ট বস্তু গ্রহণ করা হয়। গাধা যুদ্ধ ক্ষেত্রে শত্রুর মোকাবিলার জন্য অনুপযোগী। কেননা এর দ্বারা পিছুটান করে পুনরায় আক্রমণ করা যায় না যা ঘোড়া দ্বারা করা সম্ভব। এজন্যই গাধাতে গনীমাতের কোনো অংশ নেই। যেমনটি ঘোড়ার জন্য রয়েছে। সাদাকা না খাওয়ার হুকুমের সাথে গাধা দ্বারা ঘোড়ার পাল না দেয়ার হুকুমকে সংযুক্ত করা হয়েছে। অতএব আহলে বায়তগণের জন্য যেরূপভাবে সাদাকা খাওয়া হারাম অনুরূপ গাধা দ্বারা ঘোড়ার পাল দেয়াও হারাম যদিও তা সর্বসাধারণের জন্য মাকরূহ।

অত্র হাদীসে শী‘আদের ঐ দাবীর কঠোর প্রতিবাদ রয়েছে যাতে দাবী করা হয়ে থাকে যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আহলে বায়তগণকে বিশেষ ‘ইলম শিক্ষা দান করেছেন যা অন্যদের দেননি। (মিরকাতুল মাফাতীহ ৭ম খন্ড, পৃঃ ৪০৩; তুহফাতুল আহওয়াজী ৫ম খন্ড, হাঃ ৮০৩)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ