যে ব্যক্তি জামাআতের ইমামের পিছনে রাতের কিছু অংশ তারাবীহ পড়বে এবং ইমাম শেষ করলে সেও শেষ করবে (অর্থাৎ, তাঁর আগে বা পরে শেষ করবে না), তার নেকীর খাতায় পূর্ণ রাত নামায পড়ার সওয়াব লিপিবদ্ধ হবে।
মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) বলেন, ‘‘যে ব্যক্তি ইমামের সাথে নামায পড়ে এবং তার নামায শেষ করা পর্যন্ত তার সঙ্গে থাকে (ইক্তিদা করে), সেই ব্যক্তির জন্য সারা রাত্রি কিয়াম করার সওয়াব লিপিবদ্ধ করা হয়।’’[1]
এই হাদীসের উপর ভিত্তি করে বলা যায় যে, যদি কোন লোক ইমামের সাথে ৮ রাকআত নামায পড়ে এবং বিতর না পড়ে ইমামের সাথে নামায শেষ করে না, সে লোক উক্ত ফযীলত পাওয়ার অধিকারী নয়।
তদনুরূপ যদি কোন ইমাম ২১ রাকআত তারাবীহ পড়েন এবং তাঁর পশ্চাতে কেউ ১০ বা ১২ রাকআত পড়ে পৃথক হয়ে একাকী বিতর পড়ে নেয়, (কারণ তার মতে তার থেকে বেশী রাকআত পড়া বৈধ নয় তাই) তাহলে সে ব্যক্তিও উক্ত মাহাত্ম্য পাওয়ার হকদার নয়।
পক্ষান্তরে কোন মুসলিমের জন্য সাগ্রহে সুন্নত পালন করতে গিয়ে জামাআতের মাঝে বিচ্ছিন্নতা সৃষ্টি করা এবং জামাআত ত্যাগ করে চলে যাওয়া উচিৎ নয়। উচিৎ হল, তাঁর সাথে যখন ১০ বা ১২ রাকআত পড়ল, তখন বাকী নামাযটাও তাঁর সাথেই শেষ করা। আর এই বেশী নামায পড়াটা (সুন্নত না হলেও) কোন অবৈধ বা আপত্তিকর কাজ নয়। (নফল নামায বেশী পড়া বিদআত তো নয়; কারণ তা বৈধ হওয়ার কিছু দলীল তো রয়েছে। আর এ কথা পূর্বে আলোচিত হয়েছে।) অতএব বড়জোর তা ভালোর পরিপন্থী অথবা সুন্নাহর খিলাপ; যাতে ইজতিহাদী মতভেদ হওয়া অস্বাভাবিক নয়। তাহলে তা নিয়ে আমাদের আপোসের মাঝে অনৈক্য ও বিদ্বেষ সৃষ্টি করা এবং এমন ইজতিহাদী মাসআলাকে কেন্দ্র করে নিজ মতের বিরোধী পক্ষকে ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ করা আদৌ বৈধ নয়। আমাদের উচিৎ, যথাসম্ভব আমাদের মাঝে ঐক্য ও সংহতি বজায় রাখা।[2]
[2] (আশ্শারহুল মুমতে’ ৪/৮৩-৮৭ দ্রঃ)