বিশ্বব্যাপী মুসলিম নিধন ও মুসলিম দেশে ইসলাম-দমন কেন্দ্রিক উপরের ক্ষোভ সকল মুসলিম দেশে বিদ্যমান থাকলেও জঙ্গিবাদী কার্যক্রম সকল দেশে সমানভাবে বিস্তার লাভ করেনি। ইন্দোনেশিয়ায় যেরূপ সন্ত্রাসী কার্যক্রম লক্ষ্য করা যায়, মালয়েশিয়াতে তা পাওয়া যায় না, অথচ ইসলামী শিক্ষার বিস্তার, মাদ্রাসার সংখ্যাধিক্য এবং আমেরিকা ও পাশ্চাত্য বিরোধী মনোভাব মালয়েশিয়াতে বেশি। এর বড় কারণ সম্ভবত মালয়েশিয়ার অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং পাশ্চাত্য আগ্রাসন ও মিথ্যাচারের বিরুদ্বে রাষ্ট্রীয় নেতৃবৃন্দের সুস্পষ্ট মতামত। কর্মব্যস্ত ও পরিতৃপ্ত মানুষের মনে ক্ষোভ বা আবেগ বেশি স্থান পায় না। এছাড়া রাষ্ট্রীয় নেতৃবৃন্দের বক্তব্যে তাদের মনের আবেগ প্রতিধ্বণিত হয়। ফলে তা প্রকাশের জন্য বিকৃত পথের সন্ধান করে না। পক্ষান্তরে বেকার, সামাজিক বৈষম্য বা প্রশাসনিক অনাচারের শিকার মানুষের মনের ক্ষোভ ও হতাশাকে এ সকল আবেগ আরো উস্কে দেয়। এছাড়া এইরূপ মানুষকে সহজেই বুঝানো যায় যে, এভাবে দুই-চারিটি বোমা মারলে বা মানুষ খুন করলেই তোমার মত অগণিত মানুষের বেকারত্ব বা অত্যাচার শেষ হয়ে শান্তির দিন এসে যাবে।
আমাদের দেশে যারা সর্বহারার রাজত্ব বা ইসলামী রাজত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য সহিংসতা ও সন্ত্রাসের আশ্রয় গ্রহণ করেছেন তাদের বিষয়ে যে কোনো মাঠ জরিপ এ বিষয়টি প্রমাণ করবে। এমনকি আঞ্চলিক বিভাজনও তা প্রমাণ করবে। বাংলাদেশে দক্ষিণ-পশ্চিম, পশ্চিম ও উত্তরাঞ্চলে যেভাবে সমাজতন্ত্রী জঙ্গি বা ইসলামী জঙ্গির ‘‘রিক্রুটমেন্ট’’ সম্ভব, রাজধানী ও তার পূর্ব দিকে তা সম্ভব নয়। এসব এলাকার অর্থনৈতিক দৈন্য, বেকারত্ব ইত্যাদি এর অন্যতম কারণ।