ইমেইলে পাঠাতে নিচের ফর্মটি পূরণ করুন
security code
কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে ইসলামী ফিকাহ প্রথম পর্ব - তাওহীদ ও ঈমান মুহাম্মাদ ইবনে ইবরাহীম আত্তুওয়াইজিরী
আল্লাহর সুন্দর নামসমূহ

আল্লাহর নামসমূহ তাঁর পূর্ণ গুণাবলীর প্রমাণ। সেগুলো গুণ থেকে বুৎপত্তি। নামসমূহই গুণাবলী যার ফলে সেগুলো সুন্দর। আল্লাহ ও তাঁর নাম এবং গুণাবলীর জ্ঞান সর্বোত্তম জ্ঞান। তাঁর নামসমূহের মধ্য হতে যেমন:

  • আল্লাহ্: তিনিই মা‘লূহ ও মা’বূদ যাকে সকল সৃষ্টিকুল ভয়, মহব্বত ও সম্মান করে। আর তাঁর জন্য নিজেকে বিলিন করে ও প্রয়োজনে তাঁরই দিকে ব্যাকুল হয়ে ছুটে যায়।
     
  • আর-রহমান ও আর-রহীম: যাঁর দয়া প্রতিটি জিনিসকে ব্যাপৃত করে রেখেছে।
     
  • আল-মালিক: যিনি সকল সৃষ্টিজীবের একমাত্র মালিক।
     
  • আল-মালিক: যিনি সকল বাদশাহ, দেশ ও বান্দার একমাত্র মালিক।
     
  • আল-মালীক: যিনি তাঁর রাজ্যে নির্দেশসমূহ বাস্তবায়নকারী। তাঁরই হাতে বাদশাহী। যাকে ইচ্ছা তাকে রাজ্য দান করেন আর যাকে ইচ্ছা তার থেকে রাজ্য ছিনিয়ে নেন।
     
  • আল-কুদ্দূস: সকল প্রকার দোষ-ত্রুটি থেকে পবিত্র এবং কামালিয়াত তথা পরিপূর্ণতার গুণে গুণান্বিত।
     
  • আস-সালাম: যিনি সর্বপ্রকার ত্রুটি, আপদ-বিপদ ও অপূর্ণতা থেকে পবিত্র।
     
  • আল-মু‘মিন: যিনি তাঁর সৃষ্টিরাজির উপর জুলুম করা থেকে নিরাপদে রেখেছেন। তিনিই নিরাপত্তাকে সৃষ্টি করেছেন এবং তাঁর বান্দার যাকে ইচ্ছা নিরাপত্তা দান করেন।
     
  • আল-মুহাইমিন: মখলুক থেকে যাকিছু ঘটে তার উপর সাক্ষী। তাঁর থেকে কিছুই অদৃশ্য নয়।
     
  • আল-‘আজীজ: যাঁর জন্য সকল ইজ্জত-সম্মান। তিনি শক্তিশালী যার নিকটে পৌঁছা অসম্ভব। তিনি প্রভাবশালী যিনি কখনো পরাস্ত হন না। তিনি বিরাট শক্তিধর যার নিকটে সকল মাখলুক নতজানু।
     
  • আল-জাব্বার: তিনি তাঁর সৃষ্টির উপরে উচ্চ। যা চান তাই তাদের উপর করতে ক্ষমতাবান। তিনি মহাপ্রতাপশালী ও মর্যাদাবান। যিনি তাঁর বান্দাকে বাধ্য করেন ও তাদের অবস্থার শুদ্ধি করেন।
     
  • আল-মুতাকাব্বির: যিনি সৃষ্টির গুণাবলীর উপরে বড়, তাঁর সদৃশ কেউ নেই। যিনি সর্বপ্রকার মন্দ ও জুলুম থেকে উর্ধ্বে।
     
  • আল-কাবীর: তিনি ব্যতীত সবকিছুই ছোট। তাঁরই আসমান-জমিনে মহীমা ও গর্ব।
     
  • আল-খ-লিক্ব্: পূর্বের কোন সদৃশ ছাড়াই যিনি সৃষ্টিকারী।
     
  • আল-খাল্লাক্ব্: যিনি সৃষ্টি করেছেন এবং নিজ কুদরতে সবকিছুই সৃষ্টি করেন।
     
  • আল-বারী: যিনি সৃষ্টিকে নিজ কুদরতে সৃজন করে অস্তিত্বে নিয়ে এনেছেন। আর প্রতিটি সৃষ্টিকে ভিন্ন বৈশিষ্ট্য দ্বারা সৃজন করেছেন এবং তাদেরকে নিরপরাধ করে সৃষ্টি করেছেন।
     
  • আল-মুসাওবির: যিনি সৃষ্টিকুলকে বিভিন্ন আকৃতিতে তৈরী করেছেন। কেউ লম্বা আর কেউ খাটো আবার কেউ বড় আর কেউবা ছোট।
     
  • আল-ওয়াহ্হাব: যিনি সর্বদা প্রদান করেন ও নেয়ামত দ্বারা দানশীল।
     
  • আর-রাজ্জাক্ব্: যাঁর রিজিক তাঁর সকল সৃষ্টিকে ব্যাপৃত করেছে। রিজিকদাতা, যিনি রিজিক সৃষ্টি করেছেন এবং তাঁর সৃষ্টিজীব পর্যন্ত তা পৌঁছিয়ে দেন।
     
  • আল-গাফূর ও আল-গাফ্ফার: যিনি ক্ষমা ও মার্জনাই পরিচিত। তিনি আল-গাফির বান্দার পাপরাজিকে গোপনকারী।
     
  • আল-কাহির: তিনি সুমহান ও তাঁর বান্দার উপরে প্রতাবশালী। যাঁর জন্য সকল গর্দান নতজানু হয়েছে। যাঁর জন্য বশ্যতা স্বীকার করেছে সকল প্রভাবশালী।  
     
  • আল-কাহ্হার: পরাক্রমশালী  যিনি সকল সৃষ্টিকে তাঁর ইচ্ছার প্রতি করেছেন পরাভূত। তিনিই একমাত্র প্রতাপশালী আর বাকি সকলেই বশীভূত।
     
  • আল-ফাত্তাহ্: যিনি তাঁর বান্দার মাঝে সত্য ও ন্যায়ের সাথে ফয়সালা করেন। তাদের জন্য দয়া ও রিজিকের দরজাসমূহ খুলে দেন। তিনি তাঁর মু‘মিন বান্দাদের সাহায্যকারী এবং তিনি অদৃশ্যের চাবিকাঠির জ্ঞানে একক।
     
  • আল-‘আলীম: যাঁর নিকটে কোন কিছুই গোপন নয়। যিনি গোপন-প্রকাশ্য, কথা-কাজ সবই জানেন। তিনি একমাত্র সকল গায়েবের খবর রাখেন।
     
  • আল-মাজীদ: যিনি তাঁর কার্যাদি দ্বারা সম্মানিত। যাঁর মর্যাদার জন্য তাঁর বান্দারা সম্মান করে। তিনি তাঁর মর্যাদা, সম্মান ও এহ্সানের জন্য প্রশংসিত।
     
  • আর-রবব: তিনি মালিক ও পরিবর্তনকারী। তিনি সকল প্রতিপালনকারীদের প্রতিপালক। সকল সৃষ্টির মালিক। যিনি তাঁর সৃষ্টিকে লালন-পালন করেন এবং তাদের দুনিয়া-
    আখেরাতের কার্যাদি দেখাশোনা করেন। তিনি ব্যতীত নেই কোন সত্য ইলাহ্। তিনি ব্যতীত নেই কোন পালনকর্তা।
     
  • আল-‘আযীম: তিনি তাঁর বাদশাহী ও রাজত্বে মহিয়ান-গরিয়ান।
     
  • আল-ওয়াসি‘: যাঁর দয়া প্রতি জিনিসকে ব্যাপৃত করেছে। তামাম মখলুকের জন্য তাঁর রিজিক যথেষ্ট হয়েছে। তাঁর বড়ত্ব, মালিকত্ব ও  রাজত্ব ব্যাপক এবং তাঁর অনুকম্পা ও এহসান বিশাল।
     
  • আল-কারীম: যাঁর মর্যাদা মহান। যাঁর কল্যাণ অনেক ও সর্বত্র। তিনি আপদ ও ত্রুটি থেকে মুক্ত।
     
  • আল-আকরাম: যিনি সকলকে তাঁর দান ও অনুকম্পা দ্বারা ব্যাপৃত করেছে।
     
  • আল-ওয়াদূদ: যে তাঁর অনূগত ও তার দিকে ফিরে আসে তাকে ভালবাসেন। তাদের প্রশংসা করেন এবং তাদের ও অন্যদের প্রতি এহসানকারী।
     
  • আল-মুক্বীত: প্রতিটি জিনিসের হেফাজতকারী। প্রতিটি বিষয়ের রক্ষণাবেক্ষণকারী। সৃষ্টির খাদ্য দানকারী।
     
  • আশ-শাকূর: যিনি নেক আমল বর্ধিত করেন এবং পাপকে মিটিয়ে দেন।
     
  • আশ-শাকির: যিনি অল্প ইবাদতের কৃতজ্ঞতা প্রকাশকারী। যার ফলে বহুগুণ সওয়াব দান করেন। আর অনেক নেয়ামত দেন ও অল্প শুকরিয়াই সন্তুষ্ট হন।
     
  • আল-লাত্বীফ: যাঁর কাছে কিছুই গোপন থাকে না। তাঁর বান্দার প্রতি ন্যায়পরায়ণ ও তাদের প্রতি দয়া করে থাকেন যা তারা জানতেও পারে না। তিনি অতি সূক্ষ্ণ যাকে চর্মচুক্ষ দ্বারা এ দুনিয়ায় দেখা সম্ভব নয়।
     
  • আল-হালীম: যিনি বান্দার পাপের শাস্তির ব্যাপারে জলদি করেন না। বরং যাতে করে তারা তওবা করে সে জন্য তাদেরকে ঢিল দিয়ে থাকেন।
     
  • আল-খাবীর: যাঁর কাছে বান্দার কোন বিষয় গোপন থাকে না। তাদের চলাফেরা, স্থিরতা, কথা বলা, চুপ থাকা ও ছোট-বড় ইত্যাদি।
     
  • আল-হাফীয: যিনি তাঁর সৃষ্টিকুলকে হেফাজতকারী এবং তাঁর জ্ঞান সবকিছুকে ব্যাপৃত করে রেখেছে।
     
  • আল-হাাফিয: যিনি বান্দার আমলসমূহকে হেফাজত করেন এবং তাঁর অলিদেরকে পাপ কাজে পতিত হওয়া থেকে হেফাজত করেন।
     
  • আল-হাাফিয: যিনি হেফাজতকৃত বস্ত্ত থেকে অনুপস্থিত নন।
     
  • আর-রাক্বীব: যিনি তাঁর সৃষ্টি জগতের সকল অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেন।
     
  • আস-সামী‘: যিনি সকল প্রকার শব্দ শুনেন। তাঁর শ্রবণশক্তি সকল শব্দকে ব্যাপৃত করেছে। প্রয়োজন, ভাষা ও জবানের প্রকারভেদে তাঁকে শ্রবণ করা থেকে বিরত রাখে না। তাঁর নিকট প্রকাশ্য-গোপন ও নিকট-দূর সবই সমান।
     
  • আল-বাস্বীর: যিনি সবকিছুই দেখেন। তিনি বান্দার প্রয়োজন ও কার্যাদি সম্পর্কে অবহিত। আরো জানেন কে হেদায়েতের হকদার আর কে ভ্রষ্টতার হকদার। তাঁর থেকে কোন কিছুই দূরে থাকে না এবং কিছুই গোপন থাকে না।
     
  • আল-‘আলী, আল-‘আ‘লা, আল-মুতা‘আ-লী: উচ্চ ও মহান যাঁর প্রতাপ ও রাজত্বের অধীনস্ত সকল কিছু। তিনিই মহান যার চেয়ে আর কেউ মহান নেই। তিনি ‘আলী-উচ্চ যার চেয়ে আর কেউ উচ্চ নেই। তিনিই সবার চেয়ে বড় যার চেয়ে আর কেউ বড় নেই।
     
  • আল-হাকীম: যিনি তাঁর হিকমত ও ইনসাফের দ্বারা প্রতিটি জিনিস তার উপযুক্ত স্থানে রাখেন। তাঁর প্রতিটি কথা ও কাজে মহাবিজ্ঞ।
     
  • আল-হাকাম ও আল-হাকীম: যার জন্য সকল ফয়সালা সোপর্দ করা হয়েছে। তিনি কারো প্রতি জুলুম করেন না।
     
  • আল-কাইয়ূম: তিনি নিজেই সুপ্রতিষ্ঠিত ও শাশ্বত কারো প্রয়োজনবোধ করেন না। অন্যের জন্য প্রতিষ্ঠাকারী। সমস্ত মখলুকের ব্যবস্থাপনার দায়িত্বশীল। তাঁকে ঘুম ও তন্দ্রা স্পর্শ করে না।
     
  • আল-ওয়াাহিদ-আল-আহাদ: যিনি প্রতিটি কামালিয়াত তথা পূর্ণতায় একক তাঁর কোন শরিক নেই।
     
  • আল-হাইয়ু: যিনি সর্বদা বাকি, তাঁকে মৃত্যু ও ধ্বংস স্পর্শ করে না।
     
  • আল-হাসিব-আল-হাসীব: তাঁর বান্দার জন্য তিনি যথেষ্ট, যার থেকে তারা কখনো অমুখাপেক্ষী নয়। তিনি তাঁর বান্দার জন্য হিসাবকারী।
     
  • আশ-শাহীদ: সকল জিনিসের প্রতি অবলোকনকারী। যার জ্ঞান সকল বিষয়কে ব্যাপৃত করে রেখেছে। যিনি বান্দা ও তার কার্যাদির উপর সাক্ষী।
     
  • আল-কাবিইয়ু আল-মাতীন: পরিপূর্ণ শক্তিশালী যাঁর উপর কেউ প্রাধান্য বিস্তার করতে পারে না। আর কেউ তাঁর থেকে ভেসে যেতে পারে না। মহান শক্তিশালী যাঁর শক্তি অবিচ্ছিন্ন।
     
  • আল-ওয়ালিইয়ু: সর্বপ্রকার ব্যবস্থাপনার মালিক।
     
  • আল-মুওয়াল্লী: তিনি মহব্বতকারী ও সাহায্যকারী তাঁর মুমিন বান্দাদের।
     
  • আল-হামীদ: যিনি প্রশংসার হকদার। তিনি তাঁর নামসমূহ, গুণাবলী, কার্যাদি, বাণীসমূহ, এহসান, শরীয়ত ও মর্যাদার জন্য প্রশংসিত।
     
  • আস-স্বমাদ্: যিনি তাঁর পরিচালনায়, বড়ত্বে ও বদান্যতার চূড়ান্ত কামালিয়াতে তথা পূর্ণতায় পৌঁছেছেন। যাঁর নিকটে প্রয়োজনের সময় সকলে মুখাপেক্ষী হয়।
     
  • আল-কাদীর, আল-কাদির ও আল-মুক্বতাদির: পরিপূর্ণ শক্তিশালী যাকে কোন কিছুই পরাস্ত করতে পারে না এবং কোন কিছুই তাঁর থেকে হারিয়ে যায় না।  যাঁর শক্তি সর্বদা পরিপূর্ণ ও সবকিছুকে শামিল।
     
  • আল-ওয়াকীল: মখুলকের সকল কাজের ব্যবস্থাপক।
     
  • আল-কাফীল: প্রতিটি জিনিসের হেফাজতকারী এবং যিনি প্রতিটি প্রাণের দেখাশোনা করেন। সকল সৃষ্টির রিজিকের দায়িত্বভার গ্রহণকারী এবং তাদের সকলের কল্যাণের গুরুত্বদানকারী।
     
  • আল-গনিইয়ু: যিনি সৃষ্টিকুল থেকে অমুখাপেক্ষী। যাঁর কারো নিকটে কোন প্রকার প্রয়োজন নেই।
     
  • আল-হাক্কুল মুবীন: যাঁর অস্তিত্বের কোন সন্দেহ নেই। যিনি তাঁর সৃষ্টির নিকট গোপন নন।
     
  • আল-মুবীন: যিনি তাঁর সৃষ্টির জন্য দুনিয়া-আখেরাতের নাজাতের রাস্তা বর্ণনা করে দিয়েছেন।
     
  • আন-নূর: যিনি আসমান-জমিনকে আলোকিত করেছেন। যিনি তাঁর সম্পর্কে সঠিক জ্ঞানার্জনকারী ও ঈমানদারদের অন্তরকে আলোকিত করেছেন।
     
  • যুল-জালালি ওয়াল-ইকরাাম: যিনি সৃষ্টিকুল থেকে ভয় পাওয়ার হকদার ও একমাত্র প্রশংসার যোগ্য। যিনি মহত্ব ও বড়ত্ব এবং দয়া ও এহসান ওয়ালা।
     
  • আল-বাররু: তাঁর বান্দার প্রতি দয়াশীল ও তাদের প্রতি সহানভূতিশীল এবং এহসানকারী।
     
  • আত-তাওওয়াব: যিনি তওবাকারীদের তওবা কবুল করেন। আর তাঁর দিকে যারা ফিরে আসে তাদের পাপকে ক্ষমাকারী। যিনি তওবাকে সৃষ্টি করেছেন এবং তাঁর বান্দাদের থেকে তা কবুল করেন।
     
  • আল-‘আফুওয়ু: যাঁর ক্ষমা বান্দার পক্ষ থেকে যা পাপ সংঘটিত হয় তার সবইকে ব্যাপৃত করেছে। আর বিশেষ করে ক্ষমা ও তওবার সাথে।
     
  • আর-রাঊফ: যিনি পরম দয়াশীল।
     
  • আল-আওয়াল: যাঁর পূর্বে কিছু নেই।
     
  • আল-আখির: যাঁর পরে কিছু নেই।
     
  • আয-য-হির: যাঁর উপরে কিছু নেই।
     
  • আল-বাত্বিন: যাঁর নিচে কিছু নেই।
     
  • আল-ওয়ারিস: যিনি তাঁর সৃষ্টি নিঃশেষ হওয়ার পরেও বাকি থাকবেন। যাঁর নিকটে প্রতিটি জিনিস প্রত্যাবর্তন করে। যিনি চিরঞ্জীব তাঁকে মৃত্যু স্পর্শ করে না।
     
  • আল-মুহীত্ব: যাঁর শক্তি সকল সৃষ্টিকে ব্যাপৃত করেছে যাঁর থেকে হারিয়ে বা ভেসে যাওয়ার কারো কোন শক্তি নেই। তাঁর জ্ঞান প্রতিটি জিনিসকে ঘিরে রেখেছে এবং প্রতিটির সংখ্যাকে গণনা করে রেখেছে।
     
  • আল-ক্বরীব: প্রত্যেকের নিকটে তিনি। তিনি দোয়াকারীর নিকটে। সকল প্রকার ইবাদত ও এহসান দ্বারা তাঁর নৈকট্যলাভ করা যায়।
     
  • আল-হাদী: যিনি সকল সৃষ্টিকে তাদের মঙ্গলের প্রতি হেদায়েতদানকারী। তাঁর বান্দাকে হেদায়েতকারী এবং বাতিল থেকে সত্যের পথকে তাদের জন্যে স্পষ্ট করে বর্ণনাকারী।
     
  • আল-বাদী‘: যাঁর কোন সদৃশ ও মত নেই। যিনি সৃষ্টিকুল পূর্বের কোন নমুনা ছাড়াই সৃজন করেছেন।
     
  • আল-ফাত্বির: যিনি সকল সৃষ্টিরাজি সৃষ্টি করেছেন। যিনি সৃষ্টি করেছেন আসমান-জমিনে যা ছিল না।
     
  • আল-কাাফী: যিনি তাঁর বান্দার যা যা প্রয়োজন তার সবই যথেষ্ট করে দিয়েছেন।
     
  • আল-গাালিব: সর্বদা তিনি প্রভাবশালী, প্রত্যেক অন্বেষণকারীর জন্য দানকারী। কেউ তাঁর ফয়সালাকে প্রত্যাখ্যান করতে পারে না অথবা তিনি যা করেন তা নিষেধও করতে পারে না। তাঁর ফয়সালা রদকারী কেউ নেই এবং তাঁর হুকুমের খন্ডনকারীও কেউ নেই।
     
  • আন-নাাসির- আন-নাসীর: যিনি তাঁর নবী-রসূলগণ ও তাঁদের অনুসারীদেরকে তাদের শত্রুদের উপরে সাহায্য করেন। তাঁরই হাতে একমাত্র বিজয়।
     
  • আল-মুসতা‘আন: যিনি কারো কাছে সাহায্য চান না। বরং তাঁরই নিকটে সাহায্য চাওয়া হয়। তাঁর নিকটে চায় তাঁর অলি ও দুশমনরা এবং তিনি সকলকেই সাহায্য করে থাকেন।
     
  • যুল-মা‘য়াারিজ: যাঁর নিকটে ফেরেশতাগণ ও রুহ উর্ধগমণ করে। তাঁর নিকটে সকল সৎ ও সুন্দর কার্যাদি ও বাণীসমূহ উপরে উঠে যায়।
     
  • যুত্ব-ত্বওল: যিনি তাঁর অনুকম্পা, নেয়ামত ও এহসান সৃষ্টির প্রতি প্রসারিত  করে দিয়েছেন।
     
  • যুল-ফায্ল: যিনি প্রতিটি জিনিসের মালিক। তিনি তাঁর বান্দাদের প্রতি বিভিন্ন ধরণের নেয়ামত দ্বারা কৃপা করে থাকেন।
     
  • আর-রাফীক: যিনি দয়া ও দয়াশীলদেরকে পছন্দ করেন এবং বান্দাদের প্রতি পরম দয়াশীল।
     
  • আল-জামীল: তিনি সুন্দর তাঁর যাত তথা সত্ত্বায়, নামসমূহ, গুণাবলী ও কার্যাদিতে।
     
  • আত্ব-ত্বইয়িব: যিনি সকল প্রকার দোষ-ত্রুটি মুক্ত।
     
  • আশ-শিফা’: যিনি সকল প্রকার অসুখ, বালা-মসিবত ও দুরারোগ্যের আরোগ্যদানকারী।
     
  • আস-সাববুহ্: যিনি সকল প্রকার দোষ-ত্রুটি থেকে পবিত্র। যাঁর তসবীহ্ পাঠ করে সাত আসমান-জমিন এবং এতদ্বয়ের মাঝে যা আছে সকলে। আর প্রতিটি জিনিস তাঁরই প্রবিত্রতা বর্ণনা করে।
     
  • আল-বিত্র: যাঁর কোন শরিক, সদৃশ ও মত নেই। তিনি বেজোড় এবং বেজোড় কার্যাদি ও ইবাদতকে ভালবাসেন।
     
  • আদ-দাইয়ান: যিনি বান্দার হিসাব করবেন ও তাদেরকে প্রতিদান দিবেন। আর তিনি রোজ কিয়ামতে তাদের মাঝে ফয়সালা করবেন।
     
  • আল-মুকাদ্দিম ওয়াল-মুওয়াখ্খির: তিনি যাকে ইচ্ছা সামনে করেন আর যাকে ইচ্ছা তাকে পেছনে করেন। যারে ইচ্ছা উপরে উঠান আর যাকে ইচ্ছা নীচে নামান।
     
  • আল-হান্নান: তিনি তাঁর বান্দার প্রতি দয়াশীল। নেককারদেরকে সম্মানিত করেন এবং পাপিষ্ঠদের ক্ষমা করেন।
     
  • আল-মান্নান: যিনি চাওয়ার আগেই অনুগ্রহ করা শুরু করেন। অধিক দানশীল, বিভিন্ন প্রকার এহসান, পুরস্কার, রিজিক ও দান বখশিয়ে থাকেন।
     
  • আল-ক্ব-বিযু: যিনি তাঁর কল্যাণ ও ভাল জিনিসকে যার থেকে চান গুটিয়ে নেন। যিনি তাঁর অনুকম্পা প্রসারিত করেন এবং রুজিকে বান্দার যাকে ইচ্ছা তাকে প্রদান করেন।
     
  • আল-হাইয়ু-আস-সিত্তীর: যিনি তাঁর বান্দাদের যে লজ্জাশীল ও গোপনকারীদের ভালবাসেন। তিনি তাঁর বান্দার অনেক দোষ-ত্রুটি ও পাপরাজি গোপন করে রাখেন।
     
  • আস-সাইয়িদ: যিনি তাঁর সরদারীতে, মহত্বে, শক্তিতে ও সকল গুণাবলীতে পরিপূর্ণ।
     
  • আল-মুহসিন: যিনি তাঁর সকল মখলুককে তাঁর অনুকম্পা ও এহসান ভরপুর দিয়েছেন।